এটা ছিল ২০১৮ সাল যখন আমি ব্যাপারটিতে ভুল করছিলাম যা আমাকে উত্তেজিত করে তুলেছিল। এটা জানতে পারাটা খুবই আশ্চর্যজনক আর চিন্তার বিষয় ছিল যে, যে ভবিষ্যৎ কল্পকাহিনীগুলো আমরা উপন্যাসে পড়ে আসছিলাম এবং কল্পনা করতাম তা ইতোমধ্যে চলে এসেছে। এবং আমরাই সেই জেনারেশন যাদের আমরা ভাবছিলাম কিছু হাজার বছর পরে আসবে; আমরাই সর্বশেষ জেনারেশন যারা বিশাল ধ্বংস দেখবো এবং ক্বিয়ামতের বড় আলামতগুলো আপতিত হবে।
আমাকে পাগল ভাবার আগে, আমি আপনাকে অনুরোধ করবো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য এবং নিজেই সিদ্ধান্ত নেবার জন্য।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি ক্বিয়ামতের ঘটনাবলির সময়কাল বলে গিয়েছেন?
এটা সবারই জানা যে, কেউ ক্বিয়ামতের[1]ক্বিয়ামত হলো বিচার দিবস বা পৃথিবীর ধ্বংসের ইসলামি পরিভাষা। সঠিক সময়টা জানে না , যা সঠিক [2]তারা তোমাকে (রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করে, … Continue reading। কিন্তু এটা ভুল করে ক্বিয়ামতের আগের আলামত বা ঘটনাবলির সাথেও জুড়ে দেওয়া হয়, যা ভুল। কোথাও এ কথা বলা হয়নি যে আল্লাহ তা’আলা ক্বিয়ামতের আগের ঘটনাগুলোর জ্ঞান কাউকে দেননি। বরং হুযাইফা বিন ইয়ামান রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
আল্লাহর শপথ, আমার ও কিয়ামতের মধ্যবর্তী সময়ের মাঝে ঘটমান বিপদাপদ সম্পর্কে আমি সর্বাধিক জ্ঞাত। …….. [3]সহিহ মুসলিম ২৮৯১ (আন্তর্জাতিক নাম্বারিং), ৭১৫৪ (হাদিস একাডেমি প্রকাশনী), … Continue reading
এবং আরেকটি বর্ণনায় হুযাইফা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
আল্লাহর কসম! আমি জানি না আমার সাথীরা ভুলে গেছেন না কি জেনে শুনে ভুলে আছেন। আল্লাহর কসম! কিয়ামত পর্যন্ত ফিতনার সংখ্যা হবে তিন শতাধিক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রত্যেকের নাম, পিতার নাম ও গোত্রের নাম আমাদেরকে অবহিত করেছেন।[4]সুনান আবু দাউদ ৪২৪৩ (আন্তর্জাতিক নাম্বারিং), ৪২৪১ (বাংলা হাদিস ওয়েবসাইট/ … Continue reading
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই বর্ণনাগুলো দেখার পর, আমরা বুঝতে পারি যে ভবিষ্যতের ঘটনাবলি একটি স্পষ্ট সময়কাল অনুযায়ী উল্লেখ করা হয়েছে; যদিও এ বিষয়টি পুরো উম্মতের ইতিহাসে তেমন খতিয়ে দেখা হয়নি।
কিছু সহিহ দলিলের আলোকে দেখা যাক এটা কিভাবে প্রমাণিত যে এই জেনারেশনই সর্বশেষ মুসলিম জেনারেশন যারা পৃথিবীতে থাকবে।
মুসলিম উম্মাহর বয়স ১৫০০ চান্দ্রবর্ষের বেশি নয়
যেমনটি বলা হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসগুলো ক্বিয়ামতের একটি পরিপূর্ণ চিত্র তুলে ধরে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে এবং কখন পৃথিবী ধ্বংস হবে তার ঘটনাগুলোর একটি সময়কাল বলে গিয়েছেন। আমার ফয়সালা হলো আমরাই পৃথিবীতে সর্বশেষ জেনারেশন[5]আমরাই সর্বশেষ জেনারেশনের লোক হাদিস অনুযায়ী, আমার নিজস্ব কোনো ধারনা বা বুঝ অনুযায়ী না। দ্বিতীয়ত, বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আরও বেশি করে প্রমাণ করে যে ক্বিয়ামতের[6]ক্বিয়ামত হলো বিচার দিবস বা পৃথিবীর ধ্বংসের ইসলামি পরিভাষা। ছোট আলামতগুলো ইতোমধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে গেছে আর এখন বড় আলামতের সময় এসেছে।
এখন নিচের তাৎপর্যপূর্ণ হাদিসটি দেখা যাক যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিশ্চিতভাবে এই উম্মাহের বয়স উল্লেখ করেছেনঃ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنِي صَفْوَانُ، عَنْ شُرَيْحِ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنِّي لَأَرْجُو أَنْ لَا تَعْجِزَ أُمَّتِي عِنْدَ رَبِّهَا أَنْ يُؤَخِّرَهُمْ نِصْفَ يَوْم، قِيلَ لِسَعْدٍ: وَكَمْ نِصْفُ ذَلِكَ الْيَوْمِ؟ قَالَ: خَمْسُ مِائَةِ سَنَةٍ
সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে এ কামনা করতে পারি যে, আমার উম্মত তার রবের নিকট মাত্র অর্ধদিনের অবকাশে (হিসাব-নিকাশ দিতে) অক্ষম হবে না। সা’দ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হলো, অর্ধ দিন কতটুকু সময়ের? তিনি বললেন, পাঁচ শত বছরের সমান।[7]সুনান আবু দাউদ ৪৩৫০ (সহিহ- আল-আলবানি, হাকিম)
এখানে লক্ষ্য করুন উপর্যুক্ত বর্ণনাটি ‘সহিহ’ এবং এ হাদিসটি একজন গ্রহণযোগ্য আলেম- আল্লামা সুয়ুতি ব্যাখ্যা করেছেন এভাবেঃ
এই উম্মত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তেকালের ১০০০ বছর পরে অতিরিক্ত ৫০০ বছর অতিক্রম করতে পারবে না। কেউ কেউ ইমাম মাহদীর আগমন, দাজ্জালের আগমন, ঈসা ‘আলাইহিস সালামের প্রত্যাবর্তন এবং দশম শতাব্দীতে ক্বিয়ামতের অন্যান্য আলামতের উপরে ফতওয়া দিয়েছেন; কিন্তু সুয়ুতি তাঁদের খণ্ডন করেছেন এবং উম্মতের ১৫০০ বছর বয়সের ব্যাপারে দৃঢ় থেকেছেন। [8]মাযাহির হক্ব জাদিদ, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৯৮
আল্লামা সুয়ুতির উপর্যুক্ত ব্যাখ্যার পর, লেখকের নিজের মতামত দেয়ার আর কোনো অবকাশ থাকে না।
এই লেখাটি লেখার সময় আমরা ১৪৪৩ হিজরিতে [9]হিজরি হলো ইসলামি (চান্দ্র) ক্যালেন্ডার আছি। তাই এটা প্রমাণিত যে মুসলিম উম্মাহের আর ৬০ বছরের মতো বাকি আছে। এখানে লক্ষ্য রাখবেন মুসলিম উম্মাহের শেষ মানে পৃথিবীর শেষ নয়। পৃথিবী আরও কিছুকাল চলবে, এবং শুধুমাত্র নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্টতম লোকেরা পৃথিবীতে রয়ে যাবে[10]শুধুমাত্র সর্বনিকৃষ্ট লোকেদের উপরই ক্বিয়ামত কায়েম হবে এবং তাদেরই ওপর শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এবং ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।
এটা প্রমাণিত যে এই জেনারেশনই পৃথিবীতে শেষ (মুসলিম) জেনারেশন।
বিভিন্ন হাদিস থেকে এটি এখন পরিষ্কার যে বর্তমান হিজরি [11]হিজরি হলো ইসলামি (চান্দ্র) ক্যালেন্ডার শতাব্দীই এই উম্মতের শেষ ধাপ, আমরা সহজেই বড় আলামতগুলো দেখতে পারবো আর ক্বিয়ামতের ঘটনাবলির সময়রেখার মধ্যে নিজেদের অবস্থান নির্ণয় করতে পারবো। আগামী লেখাগুলোতে আমরা সাম্প্রতিক ও ভবিষ্যৎ ঘটনাবলির একটি সময়রেখা অংকন করবো যাতে করে আমরা বিচার দিনের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে পারি এবং আগামীর পৃথিবীর ব্যাপারে সচেতন হতে পারি ইনশাআল্লাহ।
নতুন লেখাগুলোর আপডেট পেতে আমাদের হোয়াটস অ্যাপ ব্রডকাস্টে যুক্ত হতে ভুলবেন না। আর এই লেখাটি আপনার আশেপাশের লোকদের মাঝে প্রচার করতে ভুলবেন না।
সবাইকে সালাম,
আওয়াইস নাসির
১৫ জুলাই, ২০২২ / ১৫ যুল-হিজ্জাহ ১৪৪৩ হিজরি
References